বেশ কিছুদিন আগে আমার পার্শ্ববর্তী এলাকার শ্রদ্ধেয় দাদা জি.সি. পাইক বলেছিলেন— ২০৪০ সালের পর আশেপাশে কোন থুরথুরে বুড়ো মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। দাদার এই দূরদর্শী চিন্তা আমার ভালো লেগেছিলো। বিষয় টা নিয়ে আমি নিজেও অনেক চিন্তা ভাবনা করেছি এবং বইপত্র পড়ে দেখেছি। মানুষের জীবনকাল আস্তে আস্তে সংক্ষিপ্ত হয়ে আসছে। আগেকার দিনে একজন মানুষের (হোক সে পুরুষ কিংবা নারী) মধ্যে যতটা উদ্যম, যতটা প্রাণশক্তি ছিলো, এখনকার সময়ে এসে সেটা আশ্চর্যজনক ভাবে লুপ্ত হয়ে গেছে। এই প্রক্রিয়াটি কতটা দ্রুততম সময়ের মধ্যে হয়েছে এবং ঠিক কিভাবে হয়েছে, সেটা ব্যাখ্যা করতে যাবার আগে আসুন, কিছু তথ্যের সাথে পরিচিত হওয়া যাক।
"চতুর্মাত্রিক সংলাপ" একটি বাংলা ভাষায় আর্টিকেল প্রকাশের একক ব্লগসাইট। এখানে প্রকাশিত আর্টিকেল বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে বিজ্ঞান, সামাজ ব্যাবস্থা, ইতিহাস এবং নিজস্ব দর্শনের ওপরে লিখিত।
বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৩
'সমকালীন জীবন ও আমাদের ভবিষ্যৎ'
'আঁধারের কথা'
বেশ কয়েক'টা দিন থেকেই মনটা বড় বেশি রকমের অস্থির হয়ে আছে। কোনভাবেই স্বস্তি খুঁজে পাচ্ছি না। দুঃখজনক বিষয় হলো, আমি আবার সঠিক ভাবে জানিও না, ঠিক কি জন্যে এমনটা হচ্ছে। তবে অতি আশ্চর্যের বিষয় এটাই যে, প্রত্যেক বছরের আগষ্ট মাস এলেই আমার জন্য সমস্ত দূর্ভাগ্য আর দূর্ঘটনার একটি ফ্রী প্যাকেজ চালু হয়ে যায়। এটা ইনস্ট্যান্ট, অর্থাৎ আমি ভালো করেই জানি যে, এই মাসে এমন কিছু একটা ঘটবে; যার জন্যে আমি মোটেও প্রস্তুত নই! ব্যক্তিগত জীবনে আমি এ্যাস্ট্রোলজি (জ্যোতিষ বিদ্যা) কিংবা অতীত জীবনের ঘটে যাওয়া বিশেষ কোন ঘটনা কিংবা ভবিষ্যতবানী- এই সমস্ত বিষয়'কে এক বিন্দুও বিশ্বাস করি না।
'রিজওয়ান ইজ বেটার দ্যান ইউ, ব্লাডি ফুলস্!'
একটা নিজস্ব দুঃখ এবং আক্ষেপ সম্ভবত আমার আজীবন ধরে থেকে যাবে। সেটা হলো একজন বাঙালী কিংবা বাংলাদেশী হিসেবে এই ভূখণ্ডে আমার জন্ম হয়েছে। আমার চল্লিশ বছর বয়সের এই পর্যন্ত সমস্ত পঠিত বিদ্যা এবং অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান দিয়ে বিশ্লেষণ করে দেখেছি যে, এই গ্রহের আর কোন রাষ্ট্র কিংবা জাতিগোষ্ঠীর মানুষ এতটা বেশি নিকৃষ্ট হিসেবে জন্ম নেয়নি। 'সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা, আমার সোনার বাংলাদেশ', আহ্! কী অপূর্ব সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ; অথচ এই উর্বর মাটিতেই জন্ম নেয় দুনিয়ার নিকৃষ্টতর এক একটি নরকের কীট! বাংলাদেশের মানুষের জন্য সবচেয়ে বেশি দূর্ভাগ্যের বিষয় হলো তারা এতটাই বেশি অশিক্ষিত মূর্খ যে, নিজের ইতিহাস সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণাও তাদের নেই। এদেশে প্রতিটি বছর এতো এতো মানুষ যে হাতে একটা সনদ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে আসছে, তাদের ঐ গ্রাজুয়েশন ক্যাপ গাউনের ভেতরে যে মানুষ গুলো অবস্থান করছে, তারা আদৌ কতটুকু শিক্ষিত হতে পেরেছে? আমি শৈশব থেকেই দেশের ইতিহাস সম্পর্কে পড়তে গিয়ে একটা স্থুল ধারণা পেয়েছিলাম যে, একটি রাষ্ট্র কিংবা জাতিগোষ্ঠী হিসেবে পাকিস্তান কে আমাদের ঘৃণা করতে হবে। আস্তে আস্তে যখন বড় হলাম, যখন আরও বিশদভাবে ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারলাম, তখন বিস্মিত হয়ে অনুভব করেছি- পাকিস্তানী মানুষেরা ততটা ঘৃণিত নয়, যতটা ঘৃণ্য নোংরা এই দেশের বাঙালীরা। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে একজন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সৈনিক যতটা নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করেছে, তার চেয়ে দশগুণ বেশি নৃশংসতা চালিয়েছে এদেশে জন্ম নেওয়া ঘাতক দালাল রাজাকারের গোষ্ঠী। কই, তাদের প্রতি যতটা ঘৃণা প্রদর্শন করা উচিৎ, সেটা তো কোনদিনই এদেশে বসে দেখলাম না। এদেশের মানুষ হিসেবে সেই রাজাকারের সর্দারদের মহান জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে দেখেছি। আমার এই লেখাটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এখানে আমি একটি স্বচ্ছ ইতিহাস তুলে ধরছি।
'ফুটবল ভাবনা'
আমার জন্ম হয়েছিল ১৯৮৩ সালে। বাংলাদেশের তৎকালীন আর্থসামাজিক এবং সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটের কথা চিন্তা করলে সেই সময়ের বিনোদন ব্যবস্থা কয়েকটি সীমিত বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। তখনকার দিনে যেহেতু মানুষের ঘরে ঘরে টেলিভিশন আসেনি এবং স্যাটেলাইট চ্যানেল কি জিনিস সেটাও যেহেতু বেশিরভাগ মানুষের ধারণার বাইরে ছিল, তাই বিনোদনের উপকরণ হিসেবে দেশীয় সংস্কৃতির চর্চা নিয়েই মেতে ছিল এদেশের সেই সময়কার মানুষ। উল্লেখযোগ্য বিনোদনের চর্চা বলতে পালাগান, ঘুড়ি ওড়ানো, গ্রামীণ মেলা, যাত্রাপালা, ষাঁড়ের লড়াই, ঘোড়ার দৌড়, নৌকা বাইচ ইত্যাদি বিষয়গুলো ছিল বহুলভাবে চর্চিত। খেলাধুলা বলতে হাডুডু এবং কখনও কখনও ফুটবল। তখনকার সময়ের ফুটবল ম্যাচে খুব কম সংখ্যক খেলোয়াড়দের জার্সি কিংবা বুট পরে খেলতে দেখা যেতো। সেই সময়গুলোতে বাংলাদেশের ফুটবল ক্লাব বলতে আবাহনী এবং মোহামেডান আর ভারতীয় তথা পশ্চিমবঙ্গের ক্লাব হিসেবে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানের নাম খুব করে শোনা যেতো। আমি শৈশবে এইসব ক্লাবের ফুটবল খেলা চলাকালীন সময়ে প্রবীণদের রেডিও কানের কাছে নিয়ে মুগ্ধ হয়ে ধারাভাষ্য শুনতে দেখেছি। ল্যাটিন আমেরিকান কিংবা ইউরোপিয়ান ফুটবলের চর্চা তখনও আমাদের দেশে সেভাবে শুরু হয়নি।
রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
'বিড়াল বৃত্তান্ত'
একটা বিষয় নিয়ে অনেক দিন থেকে চিন্তা ভাবনা করে দেখলাম। এই পৃথিবীর বুকে সর্বপ্রথম প্রাণের বিকাশ ঘটার দিনটি থেকে শুরু করে আজকের দিন পর্যন্ত সেইসব প্রাণী-ই এই গ্রহের বুকে দীর্ঘকাল যাবত সার্ভাইব করতে সক্ষম হয়েছে, যে সব প্রাণীরা নিজেদের বুদ্ধিমত্তার সফল প্রয়োগ করতে সফল হয়েছে। সেই প্রাগৈতিহাসিক জুরাসিক সময়ের অতিকায় ডাইনোসর পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল কিছু প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে। সেই সময়ে কক্ষচ্যুত কিছু গ্রহাণু হঠাৎ করে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে ঢুকে পড়েছিল, যার জন্য বেড়ে গিয়েছিল সালফার এবং ইরিডিয়ামের মাত্রা। কখনো কখনো সুনামির কারণে প্লাবিত হয়ে গিয়েছিল বিস্তীর্ণ কোন ভূখণ্ড, এসবের ফলশ্রুতিতে হারিয়ে গিয়েছিল এক কালে পৃথিবীর বুকে দাপিয়ে বেড়ানো সেই অতিকায় প্রজাতিটি। তাদের বিলুপ্ত হবার প্রধান কারণ হলো তাদের কোন নিরাপদ আশ্রয় ছিল না। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুহূর্তে তারা নিরাপদ কোথাও লুকিয়ে গিয়ে আত্মরক্ষা করতে পারেনি। অরক্ষিত অবস্থানে থাকার কারণে তারা স্রেফ ভেসে গিয়েছিল। আশ্চর্যজনক বিষয় হলো সেই জুরাসিক সময়ে আর্থ্রোপোডা পর্বের একটি ক্ষুদ্র প্রাণীও পৃথিবীতে বসবাস করত। এই ক্ষুদ্র প্রজাতিটি শুধুমাত্র নিজেদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করতে পারার জন্যই তখন বেঁচে গিয়েছিল নানান প্রাকৃতিক দুর্যোগর হাত থেকে এবং এই পার্থিব পরিবেশে বিভিন্ন ভাবে বিবর্তিত হতে হতে এখনও পর্যন্ত তারা টিকিয়ে রেখেছে নিজেদের অস্তিত্ব। এই ক্ষুদ্র প্রজাতির প্রাণীটির নাম পিঁপড়া।
হ্যাঁ, যেটা শুরুতেই বললাম, এই পৃথিবীতে সেইসব প্রাণীরাই নিজেদের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে, যারা বুদ্ধিমত্তা এবং কৌশল প্রয়োগের ক্ষেত্রে সিদ্ধহস্ত। ডাইনোসরের চেয়ে এই জায়গায় হোমোস্যাপিয়েন্স প্রজাতিটি অনেক অনেক এগিয়ে। প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটিয়ে আমাদের পুরোপুরি ভাবে বিলুপ্ত করে দেওয়া যায় না, কারণ আমরা অন্য প্রজাতিদের টিকে থাকার প্রক্রিয়া কে নিখুঁতভাবে লক্ষ্য করে এবং নিজেদের বুদ্ধিমত্তার প্রসারের দ্বারা নতুন নতুন উদ্ভাবনী পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব কে রক্ষা করতে শিখেছি। পৃথিবীতে এখনো বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটলেও আমরা পিঁপড়ের মতন কোথাও না কোথাও নিজেদের ঠিকই সুরক্ষিত করতে পারি। আচ্ছা জানেন, বর্তমানে মানুষের পর কোন প্রাণীটি বুদ্ধিমত্তা এবং কৌশল প্রয়োগের ক্ষমতায় খুবই দক্ষ? হ্যাঁ, বলছি। তবে সেটা বলার আগে একটি বিষয় বলে নেওয়া দরকার। এই পৃথিবীতে চিরায়ত একটি আত্মরক্ষার প্রাচীণ কৌশল রয়েছে। সেটা হলো- ক্ষমতাবানের সাথে আঁতাত করে চলার পদ্ধতি। বিষয় টা এমন- মনে করুণ, আপনি শারীরিক এবং মানসিক ভাবে বেশ দূর্বল, তাহলে আপনি সহজেই কিভাবে নিজেকে রক্ষা করতে পারেন? সেটা হলো ক্ষমতাবান কারো সংস্পর্শে যাওয়া এবং ক্ষমতাবানের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা। এটা করতে পারলে আপনার নিজস্ব কোন যোগ্যতা না থাকলেও ক্ষমতাবান লোকটি আপনাকে রক্ষা করবেন। এই প্রক্রিয়ার সফল প্রয়োগ করে বর্তমান সময়ে একটি বৃহৎ সংখ্যক মানুষ বেঁচেবর্তে আছেন, যাদেরকে আমরা প্রচলিত ভাষায় চামচা, চাটুকার, তেলবাজ, মোসাহেব, তোষামোদকারী ইত্যাদি বলে অভিহিত করি।
যাইহোক, বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় একটি বিশেষ প্রজাতির প্রাণীরা উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছিল যে, মানুষ খুবই ক্ষমতাবান একটি প্রজাতি। তাই তারা একটু একটু করে মানুষের সান্নিধ্যে যাওয়া শুরু করেছিল। তারা মানুষ কে খুবই ভালোভাবে লক্ষ্য করার পর মানুষের মেজাজ-মর্জি বুঝে এরপর নিজেদের পেশ করা শুরু করল। তাদের এই মিশুক আচরণ দেখে একটা সময় মানুষেরাও তাদের কে কাছে টেনে নিতে বাধ্য হলো। এই বিশেষ প্রাণীটির বৈজ্ঞানিক নাম 'ফেলিস ক্যাটাস', আমরা ওদেরকে প্রচলিত ভাষায় বিড়াল বলি। এই ক্ষুদ্রকায় প্রাণীটি বহুকাল আগে জঙ্গলের অনিরাপদ পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে ছিল, তাদের খাবার এবং নিরাপদ আশ্রয়ের সংকটময় পরিস্থিতি তাদেরকে একটা সময়ে নতুন ভাবে নিজেদের বিকশিত করার পন্থা সামনে এনে দাঁড় করিয়ে দেয়, যখন তাদের সাথে মানুষের দেখা হয়েছিল। বিড়ালেরা বুঝতে সক্ষম হয়েছিল যে, মানুষ নামের এই বিচিত্র প্রাণীটি-ই হবে তাদের তুরুপের টেক্কা, তাদের সাবলীলভাবে বেঁচে থাকার অবলম্বন। এরপর তারা তাদের ভূতপূর্ব জঙ্গলের সেই কঠোর জীবন ছেড়ে মানুষের সাথে হেঁটে হেঁটে একটি দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে লোকালয়ে চলে আসে। মানুষ যদিও প্রাথমিকভাবে বিড়াল কে নিয়ে এসেছিল নিজস্ব কিছু স্বার্থসিদ্ধির জন্য, মানুষের জীবনের কিছু চরম উপদ্রবের মধ্যে অন্যতম ছিল সাপখোপ, ইঁদুর, তেলাপোকা থেকে শুরু করে বেশকিছু ক্ষতিকর পোকামাকড়। এইসব অযাচিত উপদ্রবের বিনাশের লক্ষ্যে ওদের প্রথম নিয়ে আসা হয়। কিন্তু মানুষ একটা সময়ে নিজেদের উদ্ভাবনী ক্ষমতার প্রয়োগ ঘটিয়ে যখন সেইসব ক্ষতিকর উপদ্রব কে কৃত্রিম ভাবে দমন করতে সক্ষম হয়েছে, তখন বিড়ালের আর মানুষের জন্য বিশেষ কিছু করার ছিল না। তারা তখন মানুষের সাথে স্রেফ বন্ধুত্ব করে টিকে থাকল। একটি বিষয় খুবই লক্ষণীয়, মানুষ নিজের প্রয়োজনে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, কুকুর, ঘোড়া, ভেড়া, মহিষ ইত্যাদি অসংখ্য গৃহপালিত পশু লালন-পালন করে। এইসব পশুদের প্রত্যেকেরই কিছু নির্দিষ্ট কাজ রয়েছে এবং সেইসব কাজের জন্যেই মানুষের কাছে এদের গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু একমাত্র ব্যতিক্রম হলো বিড়াল, যার মানুষের জন্য বিশেষ কিছু করার নেই। বেশ আগে থেকেই বহুবিধ কীটনাশক এবং যাঁতাকল ব্যবহার করে ইঁদুর এবং পোকামাকড় নিধন করা হয়। তাহলে মানুষের জীবনে বিড়ালের ভূমিকা কি? এর উত্তর আগেই বলেছি, এই প্রাণীটি মানুষের সাথে স্রেফ বন্ধুত্ব করে টিকে আছে। এরা নিঃসঙ্গ মানুষের জীবনে চমৎকার একজন সঙ্গী হিসেবে অবস্থান করে। বেশ কয়েক বছর আগে একটি অদ্ভুত তথ্য জেনেছিলাম। জেলখানায় সাজাপ্রাপ্ত কয়েদীদের দীর্ঘদিন ধরে আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের থেকে দূরে থাকতে হয় বলে তারা জেল কর্তৃপক্ষের বিশেষ অনুমতি নিয়ে তাদের সাথে এক বা একাধিক বিড়াল রাখে। তাদের দীর্ঘ দিনের নিঃসঙ্গ জীবনে বিড়ালগুলো তাদের ঘনিষ্ঠ আপনজনের মতন পাশে থাকে। বিড়াল-ই একমাত্র প্রাণী, মানুষের খাবারঘর থেকে বিছানা পর্যন্ত যাদের অবাধ প্রবেশাধিকার রয়েছে। মানুষের সাথে দীর্ঘকাল সহাবস্থানের জন্য এরা ভালোভাবে মানুষের মনস্তত্ব বুঝতে পারে এবং সেভাবেই নিজেদের রিপ্রেজেন্ট করে।
মানুষের পরে এরাই হলো সেই প্রাণী, যারা সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি প্রজাতির সাথে সার্বক্ষণিক সুসম্পর্ক বজায় রেখে নিজেদের অস্তিত্ব কে টিকিয়ে রেখেছে, এটা নিঃসন্দেহে যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তার সফল প্রয়োগ। দিন কে দিন মানুষের কাছে এদের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। একটি বিষয় মোটামুটি নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়- মানুষ যতদিন পর্যন্ত এই গ্রহে তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখবে, এই মার্জারগোষ্ঠীও ততদিন পর্যন্ত নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে সক্ষম হবে। যদি কোনদিন পৃথিবীর আবহাওয়া মনুষ্য বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ে এবং মানুষ যদি কখনও অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সির কোনো অজানা গ্রহে গিয়ে বসতি স্থাপন করে, নিশ্চিত থাকুন- মানুষ তার সাথে করে এই 'জিনিস' সেই গ্রহেও টেনে নিয়ে যাবে। কারণ ঘনিষ্ঠ সহাবস্থান খুবই সিরিয়াস একটি বিষয়। ভালো থাকুক প্রতিটি মানুষ এবং তাদের পার্থিব পোষ্যবর্গ!
© কৃষ্ণেন্দু দাস/
১১.০২.২০২৩ খ্রিঃ
বুধবার, ২ মার্চ, ২০২২
'স্যাডিজম'
'স্যাডিজম'
(মনস্তাত্ত্বিক ভুবনের এক ধ্বংসাত্মক রাজ্য)
গত কয়েকটি দিন ধরে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনাবলী এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকল মানুষের মধ্যকার মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছিলাম। মানুষ হিসেবে আমাদের বলা হয় 'সৃষ্টির সেরা জীব', কারণ চিন্তাশীলতা প্রয়োগ করে এবং উদ্ভাবনী ক্ষমতা ব্যবহার করে আমরা পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিজেদের প্রতিভার সাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছি, যেটা অন্যান্য পার্থিব প্রাণীর ক্ষেত্রে সম্ভব হয়নি। কিন্তু অত্যন্ত আশ্চর্যজনক বিষয় হলো- আমাদের মধ্যে যেমন অসংখ্য চমৎকার গুণের সমন্বয় ঘটেছে, তেমনি আমাদের প্রায় প্রত্যেকের মনের গহীনেই লুকিয়ে রয়েছে বিশাল ভয়াবহ অন্ধকার রাজ্য! নিজেদের মনের গভীরের এই অন্ধকারাচ্ছন্নতা সম্পর্কে আমরা খুব কমই জানি। এই ভয়াবহ অন্ধকার জগতের ছোট একটি রাজ্যের নামঃ 'স্যাডিজম'। হিউম্যান সাইকোলজিতে 'স্যাডিজম' নামক বিষয়টি নিয়ে বিশদভাবে বিশ্লেষণ এবং মানব সমাজে এর প্রভাব নিয়ে বিস্তর গবেষণা করা হয়। আসুন, এই বিষয়টি নিয়ে ক্ষুদ্র পরিসরে একটু আলোচনা করা যাক।
স্যাডিজমঃ
অন্যকে কষ্ট দিয়ে কিংবা অপরের দুঃখ–কষ্ট দেখে আত্মতুষ্টি লাভ করা কে এককথায় 'SADISM' বলা হয়। আর যে ব্যক্তির মধ্যে এই নেতিবাচক গুণটি অতিরিক্ত মাত্রায় দৃশ্যমান তাকে আমরা SADIST (স্যাডিস্ট) বলে থাকি। একটু অন্যভাবে যদি বলা হয়- তবে অন্যের ভালো সহ্য করতে না পারা, অপর'কে মানসিকভাবে নির্যাতন করে বিকৃত আনন্দ লাভ করাই স্যাডিজম। অর্থাৎ এক কথায় এই বিষয়টি একধরনের মানসিক বিকারগ্রস্ততা ছাড়া কিছু নয়।
'স্যাডিজম' এর কোন সুনির্দিষ্ট প্রকারভেদ ও প্রকৃতি নেই। বিভিন্ন ব্যক্তিবিশেষের মধ্যে এটি বিভিন্ন রূপে এবং বিভিন্ন মাত্রায় প্রকাশ পায়। যিনি এই মানসিক বিকারগ্রস্থতায় আক্রান্ত, তিনি অবচেতন মনেই রোগটি লালন করে থাকেন। 'স্যাডিস্ট' ব্যক্তিবর্গের সামাজিক অবস্থানভেদে এর প্রকৃতি এবং রূপও ভিন্ন হয়ে থাকে।
সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে মানুষ প্রতিনিয়ত বিরূপ প্রকৃতি, বনের হিংস্র জীব-জন্তুর সাথে লড়াই করে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে। চার্লস ডারউইনের 'সারভাইভাল অফ দ্য ফিটেস্ট' থিওরী সেই আদিকাল থেকে শুরু করে একবিংশ শতাব্দীতে এসে আজও প্রাসঙ্গিক এবং পরীক্ষীত সত্য বলে প্রতিষ্ঠিত। শুধু পার্থক্য হচ্ছে- এখন মানুষই মানুষের প্রতিদ্বন্দ্বী, অন্য কেউ নয়। জীবনের সকল ক্ষেত্রে একে অন্যের সাথে প্রতিযোগিতা করে মানুষকে টিকে থাকতে হচ্ছে বর্তমানের পৃথিবীতে। এই প্রতিযোগীতায় যিনি শক্তিমান তিনি সর্বদা দুর্বলকে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন, আর দুর্বল চেষ্টা করছেন শক্তি সঞ্চয় করে শক্তিমানকে ছাড়িয়ে যেতে। এভাবেই প্রতিদ্বন্দ্বীতা এক সময় 'স্যাডিজম' এর দিকে মোড় নেয়। অর্থাৎ শক্তিমান বা উপরস্থ ব্যক্তি দুর্বল বা অধস্তনকে দাবিয়ে রাখার অস্ত্র হিসেবে তাকে পদে পদে হেনস্থা বা অপদস্থ করে মনে আত্মপ্রশান্তি অনুভব করেন। এক একজন মানুষের অবচেতনা কে সুক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, প্রতিটি মানুষের মধ্যেই এই বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তবে বেশির ভাগ মানুষের ক্ষেত্রে এটার উপস্থিতি এতটাই কম যে, সেটা তার ব্যক্তিগত জীবন কে প্রভাবিত করার সুযোগ পায় না। প্রতিটি মানুষের মধ্যেই কিভাবে স্যাডিজম বিষয়টি রয়েছে, তা একটু সহজ ভাবে ব্যাখ্যা করি।
মনে করুণঃ আপনি একটি রাস্তা থেকে যাচ্ছেন, হঠাৎ করে দূরে একটি বিকট শব্দ শুনলেন। লোকজনের চিৎকার শুনে বুঝলেন একটি দূর্ঘটনা ঘটেছে। আপনার মন কিন্তু তাৎক্ষণিক ভাবেই দূর্ঘটনার একটি বীভৎস ছবি তৈরি করে নিয়েছে আপনার মনের মধ্যে। আপনি ভেবে রেখেছেন দূর্ঘটনার স্থানে একাধিক মৃতদেহ, থেঁতলে যাওয়া মানুষের রক্তাক্ত শরীর এবং আরও অনেক বীভৎস দৃশ্য অপেক্ষা করছে যা দেখে আপনি শিউরে উঠবেন। কিন্তু ঘটনাক্রমে আপনি সেখানে পৌঁছে গিয়ে যদি দেখতে পান দূর্ঘটনায় কারোই তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, আপনার মনটা তখনই আশাহত হবে। কারণ আপনি ভেবেছিলেন ওখানে কোন একটা বীভৎসতা অপেক্ষা করে আছে এবং সেই দৃশ্য দেখতেই আপনি উৎসুক। কিন্তু যখন দেখলেন সেখানে সবাই সুস্থ আর স্বাভাবিক রয়েছে, তখনই আপনি নিরাশ হলেন। এই নিরাশাজনক মানসিক অবস্থাই আপনার ভেতরের স্যাডিজম।
ধরুন, আপনার এলাকায় আবহাওয়া খুবই দুর্যোগপূর্ণ। আবহাওয়া অধিদপ্তর বারবার করে দশ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জানিয়ে ঘোষণা দিচ্ছে। আপনার এলাকার দিকে ধেয়ে আসছে প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড়। আপনি তাৎক্ষণিকভাবে আপনার মনের ভেতরে ধ্বংসযঞ্জের একটি কাল্পনিক চিত্র তৈরি করলেন এবং তার জন্য অগ্রীম ব্যথিত হয়ে সেই ধ্বংসের জন্য অপেক্ষা করলেন। কিন্তু ঘটনাক্রমে ঘূর্ণিঝড়টি দূর্বল হতে হতে একটা সময় মিলিয়ে গেল এবং আপনার এলাকা সুরক্ষিত থেকে গেল। সেই মুহূর্তেও আপনি হতাশ হবেন, কারণ আপনি একটি ধ্বংসাত্মক ঘটনার মুখোমুখি হবার জন্য তৈরি হয়ে বসেছিলেন। একটি ধ্বংসাত্মক ঘটনা না ঘটার জন্য আপনার মনে যে হতাশার সৃষ্টি হয়, ওটাই আপনার স্যাডিজম।
মনে করুণ, আপনার শৈশবের সময়কার একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু রয়েছে, যার সাথে আপনি সুখে-দুঃখে দীর্ঘ একটি জীবন কাটিয়ে দিয়েছেন। যার সাথে জড়িয়ে আছে আপনার অসংখ্য স্মৃতিময় অধ্যায়। হঠাৎ করেই সেই বন্ধুটি চমৎকার একটি চাকরি পেয়ে গেল কিংবা বড়সড় অর্থের মালিক হয়ে সমাজে একটি উচ্চতর জায়গায় পৌঁছে গেল, আপনি কিন্তু প্রিয় বন্ধুর এই সাফল্যের ঘটনায় মন থেকে খুশি হতে পারবেন না। সংগোপনে এই বন্ধুটির সাফল্য আপনাকে ঈর্ষান্বিত করবে। এই ঈর্ষা-ই আপনার ভেতরের স্যাডিজম। এইধরণের হাজারো উদাহরণ রয়েছে আমাদের মতো সকল মানুষের ভেতরকার স্যাডিজমের। যাইহোক, লেখাটি যেখান থেকে শুরু করেছিলাম- গত কয়েকটি দিন ধরেই সারা পৃথিবীতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে জোরেশোরে আলোচনা হচ্ছে। বেশিরভাগ মানুষ একধরণের উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে যে, ঘটনার ফলশ্রুতিতে শেষমেশ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় কিনা! সবাই বাইরে থেকে এসব যুদ্ধংদেহী মনোভাবের বিপক্ষে সজোরে হেঁকে যাচ্ছে কিন্তু ট্রাস্ট মি- প্রায় পঁচানব্বুই শতাংশ মানুষই আশা করে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বেঁধে যাক। তারা সবাই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সাক্ষী হয়ে এর বীভৎসতা দেখতে চায়। এখানে কিন্তু কারোরই কোন দোষ কিংবা অপরাধ নেই। তার অবচেতন মনের স্যাডিজম তাকে এভাবে ভাবতে বাধ্য করে। কারণ মানুষ এই পৃথিবীর যতবড় সৃষ্টির সেরা জীব হোক না কেন, মানুষ- ই পৃথিবীর একমাত্র প্রাণী, যে কিনা সৃষ্টি ধ্বংসকারী!
© কৃষ্ণেন্দু দাস/
০১.০৩.২০২২ খ্রিঃ
রবিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২২
'অর্থহীন পরাবাস্তবতা'
(অর্থহীন পরাবাস্তবতা)
'....আজ খুব ভোরেই টিয়া'র ডাকে আমার ঘুম ভেঙেছে। খুব বিরক্তি নিয়ে আমি চোখ খুলে বুঝতে চেষ্টা করলাম, ঠিক কোথায় এখন আমি! প্রচন্ড রকম বিরক্তিতে আমার কপাল কুঁচকে আছে। টিয়া তার স্বভাবসুলভ বৈশিষ্ট অনুযায়ী একঘেয়ে গলায় আমাকে ডেকেই যাচ্ছে, একটা প্রচন্ড লাথিতে টিয়া'কে ঘরের অন্যপাশে ছুড়ে ফেলার ইচ্ছেটাকে অতি কষ্টে দমন করে আমি বিছানায় উঠে বসলাম। এরপর টিয়া কে কোলে নিয়ে একটু আদর করে ওকে বিস্কুট খেতে দিলাম। 'টিয়া' আমার অতি প্রিয় পোষা একটি মাঝ বয়সী বিড়াল! আমি দীর্ঘদিন ধরেই একা একা থাকতে শিখেছি; শিখে নিয়েছি একা পথ চলতে। তবে দিনের শেষে যখন চারিপাশ অন্ধকার করে নিয়ে সন্ধ্যা নেমে আসে, যখন সর্বত্র টিমটিম করে একটির পরে একটি আলো জ্বলে ওঠে; জানিনা ঠিক কেন- তখন প্রচন্ডরকম এক নিঃসঙ্গতাবোধ যেন অষ্টাঙ্গিক দৃঢ়তা নিয়ে অক্টোপাসের মতোই জড়িয়ে ধরে আমার ভেতরের নিজস্ব সত্তাটুকু! আর তাই সম্ভবত; নিঃসঙ্গতা আর নীরবতার এই একপেশে খুনসুটি কে উপেক্ষা করার জন্যেই আমার এই বিড়ালপ্রীতি! হ্যাঁ, যেটা বলছিলামঃ আজকাল ঘুমাতে বড্ডই দেরি করে ফেলছি, যার কারণে খুব সকালে ঘুম ভেঙ্গে গেলে ভীষণ অস্বস্তি হয়। সকালের আলোটুকু চোখে একবার পড়লে, নতুন করে ঘুমাতে যাওয়াও বেশ কষ্টকর! কি আর করা, চুলায় চায়ের পাত্র চাপিয়ে বসে আছি। একটু একটু করে ফুটন্ত বাষ্প জানালা দিয়ে বের হয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে এই অস্থির জানুয়ারী'র মধ্য প্রহরের ধোঁয়াটে সাবলীল বাতাসে। বাইরে কি মুক্ত বাতাস! সকালের আকাশটাও তার সমস্তটুকু মুগ্ধতা ছড়াতেই যেন ব্যাস্ত। অথচ, আজ প্রায় দিন দশেক ধরে বাইরে যাওয়া হয়ে ওঠেনি। পরিবর্তিত এই পরিস্থিতিতে সময়টা সত্যিই যেন খানিকটা থমকে আছে! জানিনা, আবার কবে বাইরে বেরিয়ে মুক্ত বাতাসে প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারবো; কবে আবারও গলা খুলে গাইবো! জানিনা, কিছুই জানিনা আমি। শুধু এটুকুই জানিঃ চলমান সংকট এখন কিছুটা বীভৎস কোনো সায়েন্স ফিকশনের মতোই মনে হচ্ছে, যার সমাপ্তি অকারণেই যথেষ্ট দুর্বোদ্ধ; অথবা আমি আসলে এখন ঘুমিয়েই আছি। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কোন একটা দুঃস্বপ্ন দেখছি; এই জানুয়ারী মাসের সকাল, চুলার ফুটন্ত বাষ্প কিংবা আমার গায়ে আলতো ছুঁয়ে লেজ বুলিয়ে যাওয়া আমার প্রিয় পোষা বিড়াল, সবই সেই দুঃস্বপ্নেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। হয়তো একটু পরেই ঘুম ভেঙ্গে জেগে উঠবো, উঠে দেখতে পাবো সব কিছুই খুব স্বাভাবিক অবস্থায় আছে; যেমনটি ছিলো আমি ঘুমাতে যাওয়ার আগেই......!'
© কৃষ্ণেন্দু দাস/
'দানে দানে তিন দান'
সেই আশির দশকের সূচনালগ্ন থেকেই নিজস্ব অবস্থান থেকে আমি আমার চোখে পৃথিবীকে পর্যবেক্ষণ করা শুরু করেছিলাম, এখনো পর্যন্ত নিশ্চলভাবে দেখে যাচ্ছি ...
-
কৃষ্ণেন্দু দাস একুশ শতকের আধুনিক বাংলা ভাষার এক অখ্যাত কবি। তাঁর জন্ম ২৯ শে আগষ্ট ১৯৮৩ ইং সালে বাগেরহাট জেলায়। বাংলার ভাষা, ঐতিহ্য, সাহি...
-
কুয়াশাচ্ছন্ন শীতার্ত দিনগুলোতে অন্যান্য দিনের চেয়ে একটু দেরি করেই বিছানা ছাড়তে ইচ্ছে করে। শরীরের মাঝে কিংবা অবচেতনে কোথায় যেন একটা আড়ষ্টতা ব...
-
কেন জানি আজ খুব করে মনে পড়ে যাচ্ছে সেইসব দিনগুলোর কথা। তখন সবেমাত্র এস.এস.সি পরীক্ষা দিয়েছি, সেটা ছিল ২০০০ সালের কথা। পড়াশোনার সমস্ত চাপ হ...