রবিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২২

'অর্থহীন পরাবাস্তবতা'

 (অর্থহীন পরাবাস্তবতা)


'....আজ খুব ভোরেই টিয়া'র ডাকে আমার ঘুম ভেঙেছে। খুব বিরক্তি নিয়ে আমি চোখ খুলে বুঝতে চেষ্টা করলাম, ঠিক কোথায় এখন আমি! প্রচন্ড রকম বিরক্তিতে আমার কপাল কুঁচকে আছে। টিয়া তার স্বভাবসুলভ বৈশিষ্ট অনুযায়ী একঘেয়ে গলায় আমাকে ডেকেই যাচ্ছে, একটা প্রচন্ড লাথিতে টিয়া'কে ঘরের অন্যপাশে ছুড়ে ফেলার ইচ্ছেটাকে অতি কষ্টে দমন করে আমি বিছানায় উঠে বসলাম। এরপর টিয়া কে কোলে নিয়ে একটু আদর করে ওকে বিস্কুট খেতে দিলাম। 'টিয়া' আমার অতি প্রিয় পোষা একটি মাঝ বয়সী বিড়াল! আমি দীর্ঘদিন ধরেই একা একা থাকতে শিখেছি; শিখে নিয়েছি একা পথ চলতে। তবে দিনের শেষে যখন চারিপাশ অন্ধকার করে নিয়ে সন্ধ্যা নেমে আসে, যখন সর্বত্র টিমটিম করে একটির পরে একটি আলো জ্বলে ওঠে; জানিনা ঠিক কেন- তখন প্রচন্ডরকম এক নিঃসঙ্গতাবোধ যেন অষ্টাঙ্গিক দৃঢ়তা নিয়ে অক্টোপাসের মতোই জড়িয়ে ধরে আমার ভেতরের নিজস্ব সত্তাটুকু! আর তাই সম্ভবত; নিঃসঙ্গতা আর নীরবতার এই একপেশে খুনসুটি কে উপেক্ষা করার জন্যেই আমার এই বিড়ালপ্রীতি! হ্যাঁ, যেটা বলছিলামঃ আজকাল ঘুমাতে বড্ডই দেরি করে ফেলছি, যার কারণে খুব সকালে ঘুম ভেঙ্গে গেলে ভীষণ অস্বস্তি হয়। সকালের আলোটুকু চোখে একবার পড়লে, নতুন করে ঘুমাতে যাওয়াও বেশ কষ্টকর! কি আর করা, চুলায় চায়ের পাত্র চাপিয়ে বসে আছি। একটু একটু করে ফুটন্ত বাষ্প জানালা দিয়ে বের হয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে এই অস্থির জানুয়ারী'র মধ্য প্রহরের ধোঁয়াটে সাবলীল বাতাসে। বাইরে কি মুক্ত বাতাস! সকালের আকাশটাও তার সমস্তটুকু মুগ্ধতা ছড়াতেই যেন ব্যাস্ত। অথচ, আজ প্রায় দিন দশেক ধরে বাইরে যাওয়া হয়ে ওঠেনি। পরিবর্তিত এই পরিস্থিতিতে সময়টা সত্যিই যেন খানিকটা থমকে আছে! জানিনা, আবার কবে বাইরে বেরিয়ে মুক্ত বাতাসে প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারবো; কবে আবারও গলা খুলে গাইবো! জানিনা, কিছুই জানিনা আমি। শুধু এটুকুই জানিঃ চলমান সংকট এখন কিছুটা বীভৎস কোনো সায়েন্স ফিকশনের মতোই  মনে হচ্ছে, যার সমাপ্তি অকারণেই যথেষ্ট দুর্বোদ্ধ; অথবা আমি আসলে এখন  ঘুমিয়েই আছি। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কোন একটা দুঃস্বপ্ন দেখছি; এই জানুয়ারী মাসের সকাল, চুলার ফুটন্ত বাষ্প কিংবা আমার গায়ে আলতো ছুঁয়ে লেজ বুলিয়ে যাওয়া আমার প্রিয় পোষা বিড়াল, সবই সেই দুঃস্বপ্নেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। হয়তো একটু পরেই ঘুম ভেঙ্গে জেগে উঠবো, উঠে দেখতে পাবো সব কিছুই খুব স্বাভাবিক অবস্থায় আছে; যেমনটি ছিলো আমি ঘুমাতে যাওয়ার আগেই......!'


© কৃষ্ণেন্দু দাস/

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

'দানে দানে তিন দান'

সেই আশির দশকের সূচনালগ্ন থেকেই নিজস্ব অবস্থান থেকে আমি আমার চোখে পৃথিবীকে পর্যবেক্ষণ করা শুরু করেছিলাম, এখনো পর্যন্ত নিশ্চলভাবে দেখে যাচ্ছি ...