"চতুর্মাত্রিক সংলাপ" একটি বাংলা ভাষায় আর্টিকেল প্রকাশের একক ব্লগসাইট। এখানে প্রকাশিত আর্টিকেল বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে বিজ্ঞান, সামাজ ব্যাবস্থা, ইতিহাস এবং নিজস্ব দর্শনের ওপরে লিখিত।
বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৩
'নির্লিপ্ত স্মৃতিচারণ'
'ব্যক্তিগত দর্শন'
খুব সম্ভবত নবম কিংবা দশম শ্রেণীতে পড়ার সময়ে আমি মোতাহের হোসেন চৌধুরী'র লেখা 'শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব' নামক গদ্যটি পড়ে ভীষণ ভাবে মুগ্ধ হয়েছিলাম। তখনকার বয়সে যদিও সেইসব দার্শনিক কথার তাৎপর্য বুঝে উঠতে পারিনি। কিন্তু বিষয়টি মাথায় ঠিকই থেকে গিয়েছিল এবং বেড়ে ওঠার সাথে সাথে একসময় বুঝতে পারলাম ঠিক কতখানি গভীরতা রয়েছে ঐ লেখাটির মাঝে। এরপর পরিনত বয়সে এসে একটু একটু করে প্রাচ্য দর্শন, আত্মিকবাদী রচনা, স্পিরিচুয়ালিটি ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে প্রচুর পড়েছি এবং নিজে নিজে চিন্তা করে বিষয়গুলোর ব্যাপকতা বুঝতে চেষ্টা করেছি। স্বতন্ত্র একটি প্রাণী হিসেবে এই পৃথিবীতে জন্ম নেবার পর একজন মানুষ হিসেবে আমরা প্রতিনিয়ত কোথায় ছুটে চলেছি, কি মহান উদ্দেশ্য কে চরিতার্থ করার জন্য আমাদের এই প্রাণপণ প্রচেষ্টা এবং এতো এতো লাফঝাঁপ করে অবশেষে আমাদের প্রাপ্তি ঠিক কতটুকু? এই ভাবনাগুলো আমাকে কখনোই স্বস্তিতে থাকতে দেয়নি। আমি দেখেছি- প্রাচীণকাল থেকে নির্দিষ্ট কিছু ধারণা এবং পুরুষানুক্রমিক প্রথা কে আঁকড়ে ধরে অনিশ্চিত পথে ছুটে যাচ্ছে বর্তমানের মানুষ। অনেকে আদৌ জানেই না কেন তারা বাধ্যতামূলক ভাবে এসব করে যাচ্ছে! মুলত একটি সদ্যোজাত শিশুর জন্মের পর যখন সে একটু বড়ো হয়, তখনই তাকে তার পরিবার এবং পারিপার্শ্বিক সমাজব্যবস্থায় অনিবার্য ভাবেই কিছু শিক্ষা নিতে হয়। তাকে শেখানো হয়ঃ
'সখী, ভালোবাসা কারে কয়'
আচ্ছা, বলুন তো ভালোবাসা ব্যাপারটি আসলে কি? প্রচুর পরিমাণ মানুষ প্রায়ই এই প্রশ্নটি জিজ্ঞাসা করেন। এর উত্তর কিন্তু মোটেই সহজ নয় বরং পরিষ্কার ভাবে চিন্তা করতে গেলে ভাবনাগুলো জট পাকিয়ে যাবার সম্ভাবনাই বেশি। 'ভালোবাসা' নামক বিষয়টি নিয়ে নানান সময়ে অসংখ্য গুণীজন প্রচুর পরিমাণ হিসাবনিকাশ করেছেন, অনেক থিওরীও বের করেছেন। কিন্তু এতকিছুর পরেও স্পষ্ট করে কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি। অনেকেই বলে থাকেন ভালোবাসা একটি মানসিক অনুভূতির নাম। এটা একান্তই নাকি মনের মধ্যে আবদ্ধ। আচ্ছা, মন বিষয়টি আসলে কি? এর একটাই উত্তরঃ মস্তিষ্ক-ই হচ্ছে মন। মানুষের যাবতীয় আবেগ-অনুভূতির একমাত্র নিয়ন্ত্রক হলো মস্তিষ্ক। মানুষের ব্রেইনের টেম্পোরাল লোবে ভালোবাসা বাস করে। টেম্পোরাল লোবে অসংখ্য নিউরোনের ভেতর দিয়ে ইলেকট্রিক ইম্পালসের বিশেষ ধরনের আদান-প্রদানই ভালোবাসা। কিন্তু কেউ কেউ আবার অন্য ভাবে বলে থাকেন যে- মানুষের আবেগ-অনুভূতি এবং ভয়ভীতির মুল নিয়ন্ত্রক হচ্ছে পিটুইটারী গ্লান্ড। একটি মেয়ে যখন একটি ছেলের প্রেমে পড়ে, তখন ছেলেটিকে দেখামাত্রই তার পিটুইটারী গ্লান্ড থেকে বিশেষ একধরণের এনজাইম নিসৃত হয় এবং সেই এনজাইমের কারনেই ছেলেটি তখন যা করে, তা দেখেই মেয়েটির হৃদয়ে দোলা লাগে।
'পৌষ পার্বণ'
প্রাচীণ লোকসংস্কৃতি এবং আবহমান বাংলার পুরনো দিনের বেশকিছু ঐতিহ্য এখন আধুনিকায়নের তীব্র স্রোতের তোড়ে ভেসে ভেসে হারিয়ে গেছে অজানায়, এমনই একটি প্রাচীণ সাংস্কৃতিক উৎসবের নাম পৌষ সংক্রান্তি বা পৌষ পার্বণ। এই প্রাচীণ উৎসবটির প্রতিটি পর্যায়ে জড়িয়ে আছে আগেকার দিনের গ্রামীণ জনপদের সাধারণ মানুষের জীবন এবং জীবিকার প্রতিচ্ছবি। সৌভাগ্যক্রমে আমার জন্ম হয়েছিল আশির দশকের প্রথম ভাগে এবং আমার শৈশবের দিনগুলো কেটেছিল প্রত্যন্ত একটি গ্রামে। এরজন্য আমি প্রাচীণ সেইসব দিনের প্রথাগত সামাজিক জীবন-জীবিকা এবং ঐতিহ্যবাহী সেইসব লোকসংস্কৃতি কে সরাসরি দেখার সুযোগ পেয়েছিলাম। পৌষের সেইসব দিনে বেশিরভাগ গ্রামীণ জনপদের মানুষের বাড়িতে নতুন আমন ধানের চালে গোলা ভর্তি হয়ে যেতো। প্রথমে ধানের জমি থেকে নতুন ফসল কেটে এনে উঠোনে স্তুপ করে রাখা হতো, এরপর উঠোনের মাঝখানে একটি খুঁটি পুঁতে একটা দড়ির সাহায্যে সারিবদ্ধভাবে কয়েকটি গরুকে বেঁধে সেই ধান মাড়াই করা হতো। ধান কাটা থেকে শুরু করে চাল বের করা পর্যন্ত প্রতিটি প্রক্রিয়া ছিল যেমন শ্রমসাধ্য, তেমনি এই প্রতিটি পর্যায় ছিল দারুণ উৎসবমুখর।
নতুন খাদ্যশস্য ঘরে তোলার পর এই সময়ে গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে আনন্দের ঢেউ খেলে যেতো। এরপর পৌষের শেষে জাঁকিয়ে শীত নামা শুরু হলে প্রতিটি বাড়ির বউঝি এবং অন্যান্য নারীরা চালের পাত্র নিয়ে ঢেঁকিতে পিষে চাল গুড়ো করতে যেতেন। আমি শৈশবে বেশ কয়েকবার মায়ের সঙ্গে চাল কুটতে গিয়েছি। গ্রামের নির্দিষ্ট একটি বাড়িতে ঢেঁকিঘরে আরও অনেক মহিলারা কোলের ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে হাজির হতেন। সেটাও ছিল দারুণ উৎসবমুখর একটা পরিবেশ। এরপর সন্ধ্যা বেলায় হাত-মুখে চালের গুঁড়ো মেখে সাদা ভূত হয়ে ঘরে ফিরতাম। শুরু হতো পিঠা তৈরির আয়োজন। চুলার আগুনে মাটির ছাঁচ রেখে চালের গুঁড়ো গুলে সেটা ছাঁচে ফেলে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখা হতো। আমি উনুনের আঁচে বসে মায়ের কাছে ঘ্যানঘ্যান করতাম। মা যথারীতি প্রথম বার পিঠা তুলে আমাকেই দিতেন। তীব্র শীতে সেই ধোঁয়া ছড়ানো গরম পিঠা হাতে নিয়ে যে সুখানুভূতি পেতাম, তা বর্ণনা করার মতো ভাষা আমার জানা নেই। সেই সময়কার আমার সমবয়সী সকল শিশুর হাতেই থাকতো থালা ভর্তি পিঠা আর নতুন খেজুরের গুড়।
এরপর সময়ের আবর্তে চুরি যাওয়া রোদের মতোই সেই দিনগুলো হারিয়ে গেছে বহুদূরে। গ্রামীণ জনপদের সমাজব্যবস্থায় এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। এখন আমরা যন্ত্র নির্ভর সময়ে এসে পৌঁছে গিয়েছি। চারপাশে বিনোদনের অসংখ্য উপকরণ। এখন আর কেউ লাঙ্গলে হালচাষ করতে করতে টানা সুরে গান গায় না, এখন উঠোনে গোবর লেপে গরু দিয়ে ধান মাড়াই করা হয় না। এখন কেউ আর চাল নিয়ে ঢেঁকিঘরে যায় না। এখন ফসল উৎপাদনের গুরুদায়িত্ব মেশিনের কাঁধে তুলে দেওয়া হয়েছে। মেশিন হালচাষ করে, আর জমির মালিকেরা সাম্প্রতিক রাজনীতি নিয়ে চিন্তা করে। সবকিছুই খুব বেশি শর্টকাট। এখন আর পিঠা বানানোর জন্য উৎসবের প্রয়োজন হয় না, এখনকার শিশুরা উনুনের আঁচে মায়ের পাশে বসে পিঠার জন্য বায়না করে না। শিশুদের হাতে তাদের বাবা-মা স্মার্টফোন তুলে দিয়েছেন। ওদের পিঠা খাওয়াতে গেলেও টিভিতে 'গোপাল ভাঁড়' কিংবা 'মোটু-পাতলু' দেখানো লাগে। নতুন ধানের চালের ঘ্রাণ ওদের কাছে অজানা, ওদের কাছে অজানা খেজুরের গুড়ের সেই আঠালো মিষ্টি স্বাদ। আধুনিকায়ন আর স্মার্টফোনের দৌরাত্ম্যে এখনকার সময়ের শিশুরা যে স্মার্টনেস বগলদাবা করে বেড়ে উঠছে, তাতে আগামী বিশ কিংবা পঁচিশ বছর পরের প্রজন্মের কাছে 'পৌষ পার্বণ' বিষয়টি হবে নেহাৎ একটি পঠিত বিষয়। এই খটখটে স্মার্টনেসে নেই মাটির ছোঁয়া, নেই নিজের আবহমান সংস্কৃতির প্রভাব। এখনকার দিনের একটাই টার্ম, ঘাড় সোজা রেখে আধুনিকতার স্রোতে গা ভাসিয়ে দাও! তবুও শৈশবের যে সোনালী অধ্যায় পার করে এসেছিলাম, যে পুরনো দিনের ঐতিহ্যের স্মৃতিতে এখনও নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত হই, এখনও কুয়াশায় ঢাকা পৌষ শেষের সন্ধ্যায় নতুন চালের একটা গরম পিঠার স্পর্শ আমাকে যতটা গভীর ভাবে আবেগে আপ্লুত করে- সেই দিন, সেই সময়গুলো, সেইসব স্মৃতিই আমাকে আবারও প্রতিবারের পৌষ সংক্রান্তিতে সেই পুরনো অবস্থানে নিয়ে দাঁড় করিয়ে দেয়, যে দিনের কাছে কোনভাবেই আর ফিরে যাওয়া সম্ভব হয় না। সবার প্রতি পৌষ পার্বণের অনেক অনেক শুভকামনা!
'সমকালীন জীবন ও আমাদের ভবিষ্যৎ'
বেশ কিছুদিন আগে আমার পার্শ্ববর্তী এলাকার শ্রদ্ধেয় দাদা জি.সি. পাইক বলেছিলেন— ২০৪০ সালের পর আশেপাশে কোন থুরথুরে বুড়ো মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। দাদার এই দূরদর্শী চিন্তা আমার ভালো লেগেছিলো। বিষয় টা নিয়ে আমি নিজেও অনেক চিন্তা ভাবনা করেছি এবং বইপত্র পড়ে দেখেছি। মানুষের জীবনকাল আস্তে আস্তে সংক্ষিপ্ত হয়ে আসছে। আগেকার দিনে একজন মানুষের (হোক সে পুরুষ কিংবা নারী) মধ্যে যতটা উদ্যম, যতটা প্রাণশক্তি ছিলো, এখনকার সময়ে এসে সেটা আশ্চর্যজনক ভাবে লুপ্ত হয়ে গেছে। এই প্রক্রিয়াটি কতটা দ্রুততম সময়ের মধ্যে হয়েছে এবং ঠিক কিভাবে হয়েছে, সেটা ব্যাখ্যা করতে যাবার আগে আসুন, কিছু তথ্যের সাথে পরিচিত হওয়া যাক।
'আঁধারের কথা'
বেশ কয়েক'টা দিন থেকেই মনটা বড় বেশি রকমের অস্থির হয়ে আছে। কোনভাবেই স্বস্তি খুঁজে পাচ্ছি না। দুঃখজনক বিষয় হলো, আমি আবার সঠিক ভাবে জানিও না, ঠিক কি জন্যে এমনটা হচ্ছে। তবে অতি আশ্চর্যের বিষয় এটাই যে, প্রত্যেক বছরের আগষ্ট মাস এলেই আমার জন্য সমস্ত দূর্ভাগ্য আর দূর্ঘটনার একটি ফ্রী প্যাকেজ চালু হয়ে যায়। এটা ইনস্ট্যান্ট, অর্থাৎ আমি ভালো করেই জানি যে, এই মাসে এমন কিছু একটা ঘটবে; যার জন্যে আমি মোটেও প্রস্তুত নই! ব্যক্তিগত জীবনে আমি এ্যাস্ট্রোলজি (জ্যোতিষ বিদ্যা) কিংবা অতীত জীবনের ঘটে যাওয়া বিশেষ কোন ঘটনা কিংবা ভবিষ্যতবানী- এই সমস্ত বিষয়'কে এক বিন্দুও বিশ্বাস করি না।
'রিজওয়ান ইজ বেটার দ্যান ইউ, ব্লাডি ফুলস্!'
একটা নিজস্ব দুঃখ এবং আক্ষেপ সম্ভবত আমার আজীবন ধরে থেকে যাবে। সেটা হলো একজন বাঙালী কিংবা বাংলাদেশী হিসেবে এই ভূখণ্ডে আমার জন্ম হয়েছে। আমার চল্লিশ বছর বয়সের এই পর্যন্ত সমস্ত পঠিত বিদ্যা এবং অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান দিয়ে বিশ্লেষণ করে দেখেছি যে, এই গ্রহের আর কোন রাষ্ট্র কিংবা জাতিগোষ্ঠীর মানুষ এতটা বেশি নিকৃষ্ট হিসেবে জন্ম নেয়নি। 'সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা, আমার সোনার বাংলাদেশ', আহ্! কী অপূর্ব সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ; অথচ এই উর্বর মাটিতেই জন্ম নেয় দুনিয়ার নিকৃষ্টতর এক একটি নরকের কীট! বাংলাদেশের মানুষের জন্য সবচেয়ে বেশি দূর্ভাগ্যের বিষয় হলো তারা এতটাই বেশি অশিক্ষিত মূর্খ যে, নিজের ইতিহাস সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণাও তাদের নেই। এদেশে প্রতিটি বছর এতো এতো মানুষ যে হাতে একটা সনদ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে আসছে, তাদের ঐ গ্রাজুয়েশন ক্যাপ গাউনের ভেতরে যে মানুষ গুলো অবস্থান করছে, তারা আদৌ কতটুকু শিক্ষিত হতে পেরেছে? আমি শৈশব থেকেই দেশের ইতিহাস সম্পর্কে পড়তে গিয়ে একটা স্থুল ধারণা পেয়েছিলাম যে, একটি রাষ্ট্র কিংবা জাতিগোষ্ঠী হিসেবে পাকিস্তান কে আমাদের ঘৃণা করতে হবে। আস্তে আস্তে যখন বড় হলাম, যখন আরও বিশদভাবে ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারলাম, তখন বিস্মিত হয়ে অনুভব করেছি- পাকিস্তানী মানুষেরা ততটা ঘৃণিত নয়, যতটা ঘৃণ্য নোংরা এই দেশের বাঙালীরা। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে একজন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সৈনিক যতটা নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করেছে, তার চেয়ে দশগুণ বেশি নৃশংসতা চালিয়েছে এদেশে জন্ম নেওয়া ঘাতক দালাল রাজাকারের গোষ্ঠী। কই, তাদের প্রতি যতটা ঘৃণা প্রদর্শন করা উচিৎ, সেটা তো কোনদিনই এদেশে বসে দেখলাম না। এদেশের মানুষ হিসেবে সেই রাজাকারের সর্দারদের মহান জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে দেখেছি। আমার এই লেখাটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এখানে আমি একটি স্বচ্ছ ইতিহাস তুলে ধরছি।
'ফুটবল ভাবনা'
আমার জন্ম হয়েছিল ১৯৮৩ সালে। বাংলাদেশের তৎকালীন আর্থসামাজিক এবং সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটের কথা চিন্তা করলে সেই সময়ের বিনোদন ব্যবস্থা কয়েকটি সীমিত বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। তখনকার দিনে যেহেতু মানুষের ঘরে ঘরে টেলিভিশন আসেনি এবং স্যাটেলাইট চ্যানেল কি জিনিস সেটাও যেহেতু বেশিরভাগ মানুষের ধারণার বাইরে ছিল, তাই বিনোদনের উপকরণ হিসেবে দেশীয় সংস্কৃতির চর্চা নিয়েই মেতে ছিল এদেশের সেই সময়কার মানুষ। উল্লেখযোগ্য বিনোদনের চর্চা বলতে পালাগান, ঘুড়ি ওড়ানো, গ্রামীণ মেলা, যাত্রাপালা, ষাঁড়ের লড়াই, ঘোড়ার দৌড়, নৌকা বাইচ ইত্যাদি বিষয়গুলো ছিল বহুলভাবে চর্চিত। খেলাধুলা বলতে হাডুডু এবং কখনও কখনও ফুটবল। তখনকার সময়ের ফুটবল ম্যাচে খুব কম সংখ্যক খেলোয়াড়দের জার্সি কিংবা বুট পরে খেলতে দেখা যেতো। সেই সময়গুলোতে বাংলাদেশের ফুটবল ক্লাব বলতে আবাহনী এবং মোহামেডান আর ভারতীয় তথা পশ্চিমবঙ্গের ক্লাব হিসেবে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানের নাম খুব করে শোনা যেতো। আমি শৈশবে এইসব ক্লাবের ফুটবল খেলা চলাকালীন সময়ে প্রবীণদের রেডিও কানের কাছে নিয়ে মুগ্ধ হয়ে ধারাভাষ্য শুনতে দেখেছি। ল্যাটিন আমেরিকান কিংবা ইউরোপিয়ান ফুটবলের চর্চা তখনও আমাদের দেশে সেভাবে শুরু হয়নি।
'দানে দানে তিন দান'
সেই আশির দশকের সূচনালগ্ন থেকেই নিজস্ব অবস্থান থেকে আমি আমার চোখে পৃথিবীকে পর্যবেক্ষণ করা শুরু করেছিলাম, এখনো পর্যন্ত নিশ্চলভাবে দেখে যাচ্ছি ...
-
কৃষ্ণেন্দু দাস একুশ শতকের আধুনিক বাংলা ভাষার এক অখ্যাত কবি। তাঁর জন্ম ২৯ শে আগষ্ট ১৯৮৩ ইং সালে বাগেরহাট জেলায়। বাংলার ভাষা, ঐতিহ্য, সাহি...
-
কুয়াশাচ্ছন্ন শীতার্ত দিনগুলোতে অন্যান্য দিনের চেয়ে একটু দেরি করেই বিছানা ছাড়তে ইচ্ছে করে। শরীরের মাঝে কিংবা অবচেতনে কোথায় যেন একটা আড়ষ্টতা ব...
-
কেন জানি আজ খুব করে মনে পড়ে যাচ্ছে সেইসব দিনগুলোর কথা। তখন সবেমাত্র এস.এস.সি পরীক্ষা দিয়েছি, সেটা ছিল ২০০০ সালের কথা। পড়াশোনার সমস্ত চাপ হ...