বেশ কয়েক'টা দিন থেকেই মনটা বড় বেশি রকমের অস্থির হয়ে আছে। কোনভাবেই স্বস্তি খুঁজে পাচ্ছি না। দুঃখজনক বিষয় হলো, আমি আবার সঠিক ভাবে জানিও না, ঠিক কি জন্যে এমনটা হচ্ছে। তবে অতি আশ্চর্যের বিষয় এটাই যে, প্রত্যেক বছরের আগষ্ট মাস এলেই আমার জন্য সমস্ত দূর্ভাগ্য আর দূর্ঘটনার একটি ফ্রী প্যাকেজ চালু হয়ে যায়। এটা ইনস্ট্যান্ট, অর্থাৎ আমি ভালো করেই জানি যে, এই মাসে এমন কিছু একটা ঘটবে; যার জন্যে আমি মোটেও প্রস্তুত নই! ব্যক্তিগত জীবনে আমি এ্যাস্ট্রোলজি (জ্যোতিষ বিদ্যা) কিংবা অতীত জীবনের ঘটে যাওয়া বিশেষ কোন ঘটনা কিংবা ভবিষ্যতবানী- এই সমস্ত বিষয়'কে এক বিন্দুও বিশ্বাস করি না।
"চতুর্মাত্রিক সংলাপ" একটি বাংলা ভাষায় আর্টিকেল প্রকাশের একক ব্লগসাইট। এখানে প্রকাশিত আর্টিকেল বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে বিজ্ঞান, সামাজ ব্যাবস্থা, ইতিহাস এবং নিজস্ব দর্শনের ওপরে লিখিত।
বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৩
'আঁধারের কথা'
এসব ক্ষেত্রে কাকতালীয় ভাবে কিছু কিছু ঘটনার প্রমান যদিও পাওয়া যায়, তবে আর যাইহোক, একজন বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ হিসাবে অন্তত এইসব ভণ্ডামি তো আর মেনে নিতে পারিনা; অথচ এই মুহূর্তে আমাকে ভাবনার প্রসার ঘটাতে হচ্ছে। কারণ আর কিছুই না, এই আগষ্ট মাস! অভ্যাস বশতঃ দীর্ঘদিন থেকেই আমি দিনলিপি লিখে আসছি। এখন আমার কাছে আমার পেছনে ফেলে রেখে আসা পুরো ষোল বছরের হিসাব লিপিবদ্ধ আছে। এবং বলাই বাহুল্য, এই ১৬ টি বছরের প্রত্যেকটি আগষ্ট মাসেই আমার জন্য দুর্বিসহ যপন্ত্রনাময় সব ঘটনার প্রমান রেখে গেছে। তবে সবথেকে মজার বিষয়টা হলোঃ আমার জন্ম হয়েছিলো ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দের এই আগষ্ট মাসের ২৯ তারিখের একটি সোমবারে, বাংলা ক্যালেন্ডারে তখন ১৩৯০ বঙ্গাব্দের ১২ ই ভাদ্র। আমি জন্মেছিলাম কৃষ্ণপক্ষের ঘোর নিশুতি রাতে। বড় হবার পর অনেকের কাছে শুনেছি, ভাদ্র মাসের অমাবস্যা তিথিতে নাকি অনেক অশুভ আর অলৌকিক ঘটনা ঘটে! এরপর থেকেই আমার তাগিদ হয়ে দাঁড়ালো প্রতি ভাদ্র মাসের অমাবস্যা রাতে জিরো আওয়ার (রাত ১২ টা) পার হলেই চুপি চুপি কোন আলো ছাড়াই নির্জন কোন স্থানে গিয়ে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করা। প্রথম প্রথম যদিও যথেষ্ট ভয় লাগতো আমার, তারপর কখন যে ভয় নামক এই অনুভূতিটা ভালোলাগায় রূপ নিলো, তা বুঝতেই পারিনি। শুধু এইটুকু অনুভব করতে পারতাম, কৃষ্ণপক্ষের নিকষ কালো আঁধারী রাত এলেই আমার ব্যক্তিসত্তার মধ্যে এক প্রকারের অদম্য আকর্ষণ সৃষ্টি হতো। কিন্তু কেন? সেটাও জানা হয়নি আমার আজও। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য আর আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, আমার মুল নাম 'কৃষ্ণেন্দু'। এটা মুলত একটি সংস্কৃত শব্দ। শাব্দিক ভাবে 'কৃষ্ণ' নামটির সমার্থক শব্দ হলো কালো, আর 'ইন্দু' শব্দের অর্থ চাঁদ। কিন্তু চাঁদ তো কালো নয়। চাঁদ সব সময় সূর্যের আলোয় প্রতিফলিত হয়ে উজ্জ্বল বর্ন ধারণ করে। তাহলে 'কৃষ্ণেন্দু' নামটির মানে কি হবে? পরে গভীর ভাবে চিন্তা করে দেখেছি যে, চাঁদ নির্দিষ্ট একটি সময় কালো বর্ণ ধারণ করে; যখন সূর্য, পৃথিবী এবং চাঁদ সমান্তরালে অবস্থান নেয়, তখনই হয় গ্রহন। তার মানে কি এটাই পরিষ্কার নয় যে, 'কৃষ্ণেন্দু' নামের সত্যিকার অর্থ হল গ্রহন লাগা চাঁদ কিংবা অমাবস্যা তিথির চাঁদ! খুব সম্ভবতঃ এই কারনেই আঁধার আমার এতটাই প্রিয়। তাই যখনই সুযোগ পাই গভীর রাতে চুপিসারে একা একা বেরিয়ে পড়ি ঘর থেকে এক অপার্থিব সৌন্দর্য্যকে খুঁজতে। কখনও কখনও পেয়ে যাই, আর কখনও'বা নিজেকেই হারিয়ে ফেলি এক অনিশ্চিত অন্ধকারের মাঝে..!
© কৃষ্ণেন্দু দাস/
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
'দানে দানে তিন দান'
সেই আশির দশকের সূচনালগ্ন থেকেই নিজস্ব অবস্থান থেকে আমি আমার চোখে পৃথিবীকে পর্যবেক্ষণ করা শুরু করেছিলাম, এখনো পর্যন্ত নিশ্চলভাবে দেখে যাচ্ছি ...
-
কৃষ্ণেন্দু দাস একুশ শতকের আধুনিক বাংলা ভাষার এক অখ্যাত কবি। তাঁর জন্ম ২৯ শে আগষ্ট ১৯৮৩ ইং সালে বাগেরহাট জেলায়। বাংলার ভাষা, ঐতিহ্য, সাহি...
-
কুয়াশাচ্ছন্ন শীতার্ত দিনগুলোতে অন্যান্য দিনের চেয়ে একটু দেরি করেই বিছানা ছাড়তে ইচ্ছে করে। শরীরের মাঝে কিংবা অবচেতনে কোথায় যেন একটা আড়ষ্টতা ব...
-
কেন জানি আজ খুব করে মনে পড়ে যাচ্ছে সেইসব দিনগুলোর কথা। তখন সবেমাত্র এস.এস.সি পরীক্ষা দিয়েছি, সেটা ছিল ২০০০ সালের কথা। পড়াশোনার সমস্ত চাপ হ...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন